ফোন নম্বর বন্ধ। ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ কোনো মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হচ্ছে না। ফেসবুকে হঠাৎ উঁকি দিলেও ম্যাসেঞ্জারে পাঠানো প্রশ্নের কোনো কথার উত্তর দিচ্ছেন না সারিকা। কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এই মডেল ও অভিনয়শিল্পীকে। কোথায় তিনি, পরিচিতজনদের অনেকেরই এই প্রশ্ন? প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সারিকা আর তাঁর মায়ের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন করেও কোনো লাভ হয়নি। সারিকা তাহলে কোথায়?
ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ও পরিচালক এস এ হক অলীকের নাটকে অভিনয় করেছেন সারিকা। তিনি বলেন, ‘প্রযোজকদের সংগঠন থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর আমি নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। ফোন করেছি, এসএমএসও পাঠিয়েছি—কিন্তু সারিকা কোনো উত্তর দেয়নি। আমি শুনেছি, কারও সঙ্গেই তাঁর যোগাযোগ নাই।’
অভিনয়জগতে সারিকার ঘনিষ্ঠ বন্ধু চিত্রনায়ক ইমন। একসঙ্গে তাঁরা দুজন বিজ্ঞাপনচিত্র আর নাটকে অভিনয় করেছেন। বিভিন্ন স্টেজ শোতে তাঁদের পারফর্ম করতে দেখা গেছে। সারিকার সঙ্গে তাঁর বন্ধু ইমনেরও নাকি অনেক দিন কোনো যোগাযোগ নেই। আজ শনিবার দুপুরে ইমন বলেন, ‘ফোনে কথা হতো না। শেষ কথা হয়েছে, তা-ও মাস দুয়েক আগে। এসএমএসে বেশি যোগাযোগ হতো। ওর যে আসলে কী হয়েছে, কিছুই বুঝি না! যথেষ্ট সম্ভাবনাময় একজন মডেল ও অভিনয়শিল্পী। একটু যদি সিরিয়াস হতো, তাহলে অনেক ভালো করতে পারত।’
এদিকে ‘অ-শিল্পীসুলভ আচরণ’-এর জন্য অভিনয় শিল্পী সংঘের সদস্য সারিকা সাবরিনকে ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ করেছে টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টেলিপ্যাব)। ১ আগস্ট থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকা অবস্থায় এই অভিনেত্রী কোনো নাটক, মিউজিক ভিডিও, বিজ্ঞাপনসহ সংগঠনের কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন না। গত ১০ এপ্রিল সারিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন প্রযোজক মোহাম্মদ বোরহান খান। তাঁর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ জুলাই টেলিপ্যাবের সালিস বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে সংগঠনের কার্যকরী কমিটিতে পাস হয় সিদ্ধান্তটি। সালিস বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন টেলিপ্যাবের সভাপতি মামুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক ইরেশ যাকের, সালিস বৈঠকের আহ্বায়ক তারেখ মিন্টুসহ অনেকেই।
সাংগঠনিক বিবৃতি থেকে জানা যায়, গত ২১ মার্চ পাঁচটি নাটকের শুটিংয়ে নেপাল যাওয়ার কথা ছিল সারিকার। এর জন্য নির্মাতার কাছ থেকে অগ্রিম পারিশ্রমিক ৫০ হাজার টাকা নেন তিনি। সেই সঙ্গে দেশে ফেরার টিকিট এবং নাটকের চিত্রনাট্য বুঝে নেন। এর আগে ২০ মার্চ সারিকার সঙ্গে নির্মাতাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঠিক সময়ে বিমানবন্দর পৌঁছে যাবেন। কিন্তু সঠিক সময়ে বিমানবন্দরে শুটিং ইউনিট পৌঁছালেও সারিকা যাননি। এরপর সারিকাকে ছাড়াই নেপালে চলে যায় শুটিং ইউনিট। তাই পরিকল্পনায় থাকা সারিকাকে নিয়ে পাঁচটি নাটক নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি, যার কারণে প্রযোজক বোরহান খান আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হন।