জিম্বাবুয়ের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগোয়াকে নির্বাচনে জয়ী ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১০টি প্রদেশের সব কটির ফল গতকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জানু-পিএফ পার্টির নানগাগোয়া জয়ী হয়েছেন। বিরোধী দলের নেতা নেলসন চামিসা পেয়েছেন ৪৪ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট।
বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করার পর নির্বাচন কমিশনের মঞ্চ থেকে বিরোধী দলের কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেয় পুলিশ।
সোমবার জিম্বাবুয়েতে সাধারণ নির্বাচনে ভোট নেওয়া হয়। একই দিন পার্লামেন্টারি ও স্থানীয় নির্বাচনেরও ভোট নেওয়া হয়। বুধবার আংশিক ফল প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায়, বেশির ভাগ আসনে জয়ী ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল জানু-পিএফ। ১১০টি আসনে শাসক দল জানু-পিএফ ও ৪১টিতে এমডিসি জোট জয় পায়। জিম্বাবুয়ের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে মোট ২১০টি আসন রয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে মোট ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি পেতে হয়।
বুধবার নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করার কথা ছিল। বিরোধী দলের দাবি, চামিসা জয় পাওয়ায় কমিশন ফল প্রকাশে দেরি করে।
নির্বাচিত ঘোষণার পর প্রেসিডেন্ট নানগাগোয়া দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, দ্বিতীয়বার জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পেরে তিনি সম্মানবোধ করছেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়ে দ্বিমত থাকলেও স্বপ্ন পূরণে আমরা এক। এটা নতুনভাবে শুরু। সবার জন্য নতুন জিম্বাবুয়ে গড়ে তুলতে আসুন আমরা শান্তি, একতা ও ভালোবাসায় একসঙ্গে হাতে হাত মিলাই।’
আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার আগে নির্বাচনে জয় পেয়েছেন বলে দাবি করেন চামিসা। গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন জানু-পিএফ পার্টি ‘ফল জালিয়াতির চেষ্টা করছে’ এবং তাঁরা ‘এটা হতে দেবেন না’।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, কোনো কারচুপি হয়নি।
গত নভেম্বরে সামরিক বাহিনীর চাপে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন জিম্বাবুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে। ৯৪ বছর বয়স্ক মুগাবে প্রায় ৩৭ বছর দেশটির রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন। নানগাগোয়া একসময় রবার্ট মুগাবের মিত্র ছিলেন। তবে এখন তাঁরা পরস্পরের চরম শত্রু।
গত বছর পুরো বিশ্বকে চমকে দিয়ে জিম্বাবুয়ের ক্ষমতা দখল করেন দেশটির জেনারেলরা। অভিযোগ রয়েছে, ওই সময় রবার্ট মুগাবে তাঁর স্ত্রী গ্রেসকে ক্ষমতায় বসাতে চেয়েছিলেন।
ভোট কারচুপির অভিযোগে রাজধানী হারারেতে বুধবার বিরোধী দলের বিক্ষোভে জিম্বাবুয়ের পুলিশের গুলিতে ছয়জন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিরা সরকারবিরোধী মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন বলে জানায় স্থানীয় পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন বেশ কজন। সহিংসতার ঘটনায় গতকাল হারারে ভুতুড়ে নগরে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।