শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন

ত্বকের রঙে ঠোঁটকাঠি

  • আপডেট সময়: শনিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৮
  • ৬৮৪ বার

ঠোঁটকাঠি, মানে লিপস্টিকের জন্ম প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে। নানা পদ্ধতিতে ঠোঁট রাঙানোর কারিগরি চলত প্রাচীন সেই সময়ে। কয়েক শতক আগেও লিপস্টিক বলতে লাল রংই বোঝাত। ত্বকের রং যেমনই হোক, ওই একটা রংই চলত। বিশেষজ্ঞ মতামত—ত্বকের রঙের ধারার সঙ্গে মিলিয়ে লিপস্টিকের রং বেছে নেওয়া ভালো। লিপস্টিকের সঠিক রং যতটা সুন্দর করে তুলবে আপনাকে, বেঠিক রং ঠিক ততটাই অসুন্দর করে তুলতে পারে।লিপস্টিক পাওয়া যখন দুষ্কর ছিল, তখন থেকেই কিন্তু লিপস্টিকের প্রচলন। নিত্যনতুন পদ্ধতিতে ঠোঁট রাঙানো হতো। পাশ্চাত্যে বেরি ফলের রস দিয়ে লিপস্টিক, ব্লাশঅন কিংবা আইশ্যাডোর কাজ সারতেন অনেকে। আমাদের এখানে একই কাজটি করা হতো ঠোঁটে রঙিন কাগজ চেপে ধরে।

চিত্র বদলে গেছে। এখন লিপস্টিক হাতের মুঠোয়। লিপস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বয়সও এখন কোনো বিষয় নয়। বরং ত্বকের রংটা এখানে মুখ্য। লিপস্টিক এমনই একটা প্রসাধন, ত্বকের রঙের সঙ্গে না মানালে যা নিয়ে খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করাই ভালো।

রূপবিশেষজ্ঞ কানিজ আলমাস খানের মতে, মেরুন, রুবি লাল রঙের লিপস্টিকে প্রায় সবাইকে ভালো লাগে। যাঁদের গায়ের রং চাপা, তাঁরা যদি লালের সঙ্গে একটু কালচে কোনো রং মিশিয়ে নেন, মানাবে ভালো।

ত্বকের রঙের ধারা মানে স্কিন টোন বোঝার সহজ বুদ্ধি হলো ত্বকের নিচের শিরার রং বোঝা। শিরার রং যদি নীল বা বেগুনি হয়, তাহলে আপনি ‘কুল টোন’-এর অধিকারী। অর্থাৎ আপনার ত্বকের নিচের রং হলো গোলাপি, লাল বা নীলচে। ত্বকের নিচের রং (আন্ডার টোন) হলদেটে, বাঙ্গি বা সোনালি ধাঁচের হলে সেটি ‘ওয়ার্ম টোন’ আর শিরার রং সবুজ। নীল ও সবুজ শিরা যাঁদের, তাঁদের সুবিধা সবচেয়ে বেশি। ত্বকের রং নিরপেক্ষ হওয়ায় তাঁরা প্রায় সব রঙেই সাজাতে পারেন ঠোঁট। ত্বকের ওপরের রঙের ওপর নির্ভর করে লিপস্টিকের রং ঠিক করা হয় না। বরং ত্বকের নিচে যে রং লুকিয়ে আছে, সেটার ওপর নির্ভর করেই লিপস্টিকের রঙের তালিকা (কালার চার্ট) বানানো হয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে—জানালেন কানিজ আলমাস খান।

আন্ডার টোন নীলচে হলে মেরুন ধাঁচের গাঢ় রং মানাবে। হলদেটে টোন যাঁদের, তাঁদের জন্য চকলেট, কফির মতো রং। আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষের আন্ডার টোন জলপাই রঙের। কারোরটা একটু উজ্জ্বল জলপাইরঙা, কারও-বা চাপা।

দিনের বেলায় ম্যাট লিপস্টিকই ভালো। রাতের বেলায় দাওয়াতে বা চকচকে (শাইনি) মেকআপের সঙ্গে গ্লসি লিপস্টিক ব্যবহার করতে পারেন। দুটোই এখন বেশ চলছে। লিপলাইনার শুধু লিপস্টিকের লাইন ঠিক করার জন্য। মেটালিক লিপস্টিকও চলছে। এখন তো কালো লিপস্টিকও জনপ্রিয়। ন্যুড রং পাশ্চাত্যে আগে ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। আমরা যখন পাশ্চাত্যের ফ্যাশন ও স্টাইলগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করা শুরু করলাম, তখন থেকে ন্যুড রঙের ব্যবহারও শুরু হয়েছে। প্লাম রং, লাল, মেরুন, নীল, সবুজ, ছাই রঙের লিপস্টিক এখন বেশ জনপ্রিয়। কানিজ আলমাসের মতে, কোনো স্টাইলই এখন আর উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সবাই সবকিছু ব্যবহার করে দেখছেন।

লিপস্টিক আর একটু কাজল একজন মানুষের চেহারায় সতেজতা নিয়ে আসতে পারে। একটু রঙের ছোঁয়া পুরো চেহারায় প্রাণবন্ত ভাব নিয়ে আসে। আনুষ্ঠানিক কোনো আয়োজনে যাওয়ার আগে লিপস্টিক লাগানো উচিত। এতে চেহারাতেও আনুষ্ঠানিকতা ফুটে ওঠে।

মডেল তৃণর ত্বকের রং উজ্জ্বল হওয়ায় তার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে বাঙ্গি ন্যুড টোন, রুবি লাল, প্লাম (একটু মেরুনরঙা বেগুনি), মভ (হালকা বেগুনি ধাঁচের) রঙের লিপস্টিক। মডেল সায়রার ত্বক মিষ্টি শ্যামলা, ঠোঁটের রংগুলোতেও আছে সেই ধারা। কোরাল কমলা, হালকা গোলাপি, ন্যুড, হালকা বাঙ্গি রংগুলো মানিয়ে গেছে তাঁর ব্যক্তিত্বের সঙ্গেও। মডেল মাইশার চাপা রঙের সঙ্গে মিলিয়ে পাউডার গোলাপি, হালকা বেগুনি, কমলা রঙের লিপস্টিকগুলো প্রাধান্য পেয়েছে।

ঠোঁটকাঠির রঙে রাঙা ঠোঁটে আপনাকে দেখাবে সুন্দর, সে নিয়ে তো সন্দেহ নেই। এতে আপনার ব্যক্তিত্বও ফুটে উঠবে। শুধু ত্বকের রংটা কোন ধাঁচের, তা বুঝে নিতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ